আজ থেকে ট্রেন বন্ধের ঘোষণা

রানিং স্টাফদের দাবির বিষয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো মতামতের ভিত্তিতে একটি সভা ডেকেছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়। কিন্তু দাবির বিষয়ে অনড় থাকায় গতকাল সোমবারের সভায় যোগ দেননি রেলের রানিং স্টাফরা। একই সঙ্গে রানিং স্টাফরা আজ মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি বহাল থাকবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা রেল মন্ত্রণালয়ের সভা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের কোনো কর্মচারী সভায় অংশগ্রহণ করেননি। আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের দাবি মানা হবে না। আমাদের কাছে আরো সময় চাওয়া হবে। সে জন্যই আমরা আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছি।

আমরা মঙ্গলবার (আজ) থেকে ট্রেন চালানো বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতিতে যাব। আমাদের কর্মসূচি কাল থেকে চলতে থাকবে।’ এদিকে ট্রেন বন্ধের কর্মসূচির বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ‘আমরা আলোচনা করার জন্য রানিং স্টাফদের ডেকেছিলাম, তাঁরা আসেননি। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে হবে। কারণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাইরে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই। তবে ট্রেন বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আন্দোলনে যুক্ত থাকা নেতারা জানিয়েছেন, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন প্রদান এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ফলে ২৮ জানুয়ারি (আজ) থেকে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন।

রেলওয়ের অপারেশন বিভাগ জানিয়েছে, সরাসরি ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকা শ্রমিকরা কাজ না করলে ট্রেন চালানো অসম্ভব এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। এতে ট্রেনের যাত্রীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জানায়, ‘২০২২ সালের ২১ আগস্ট অর্থ বিভাগের ৯১ নম্বর স্মারকে জারি করা পত্রের (খ) অনুচ্ছেদটি অপরিবর্তিত রাখা হলো এবং (ক) অনুচ্ছেদটি নিম্নরূপে সংশোধন করা হলো।’

সংশোধনে বলা হয়, ‘রানিং স্টাফ হিসেবে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভাতা বা দৈনিক ভাতার পরিবর্তে রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোডের বিধান অনুযায়ী রানিং অ্যালাউন্স প্রাপ্য হবেন। চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা প্রাপ্য হবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ প্রাপ্য মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ মত জানার পর আরো ফুঁসে ওঠেন রানিং স্টাফরা। তাঁরা বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আট ঘণ্টার বেশি আমরা কাজ করব। আমরা তো সবাই টাকার জন্যই কাজ করি। আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে যদি টাকাই না দেয়, তাহলে আমরা কাজ করব কেন?’

কর্মসূচির বিষয়ে এর আগে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে আন্দোলন করলে রেলওয়ের কর্মকর্তারা আমাদের ডাকলেন। তাঁরা আমাদের কাছে ১০ দিন সময় চেয়েছিলেন। আমরা তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা আমাদের জন্য কিছু করতে পারলেন না। পরে ১ জানুয়ারি আমরা জানিয়ে দিলাম, আমরা আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চালাব না।’

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *