বাংলাদেশে ২ জনের এক প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার অনুদান: ট্রাম্প

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে মার্কিন সরকার যে অনুদান দিয়েছে, সেটির মধ্যে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার ‘কেউ নাম শোনেনি’ এমন একটি প্রতিষ্ঠানের হাতে গিয়ে পড়ার কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ভাষায় যে প্রতিষ্ঠান শুধু দুইজনকে নিয়ে গঠিত। ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশটির গভর্নরদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার দেওয়া হয়। এটা এমন এক প্রতিষ্ঠান পেয়েছে, যার নাম আগে কেউ শোনেনি।

“কল্পনা করতে পারেন! আপনার ছোট একটি প্রতিষ্ঠান আছে; আপনি এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, সেখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। এর মধ্যে আপনি মার্কিন সরকারের কাছ থেকেই পেয়ে গেলেন দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার।” তার ভাষ্য, “ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করেন, দুজন। আমার মনে হয়, তারা এখন খুবই খুশি; খুবই ধনী। কোনো ব্যবাসায়িক সাময়িকীর প্রচ্ছদে শিগগিরই তাদের ছবি ছাপা হবে, প্রতারণায় সেরা হওয়ার জন্য।”

সরকারের ব্যয় কমাতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু করেছেন ট্রাম্প। এ জন্য গঠন করেন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই), যেটির প্রধান হিসেবে আছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। বিভিন্ন খাতের বরাদ্দে কাটছাঁট করা এই বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য।

এর প্রমাণও রাখতে শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় জনবল ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে মার্কিন সহায়তা বিশেষ করে ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের ঘোষণা এসেছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৫টি অনুদান বাতিলের তথ্য দেয় ডিওজিই। সেখানে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলারও রয়েছে। ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে’ ওই অনুদান দেওয়ার কথা ছিল বলে ডিওজিইর পোস্টে বলা হয়। ট্রাম্প বক্তৃতায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলার আগে ভারতেও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এমন ধরনের সহায়তা নিয়ে কথা বলেন।

ডিওজিইর বাতিল হওয়া অনুদানের তালিকায় ভারতের ‘ভোটার উপস্থিতি’ বাড়ানোর ২১ মিলিয়ন ডলারও ছিল। গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনায় ভারতকে দেওয়া অনুদানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, “আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতকে দেওয়া হয় দুই কোটি ১০ লাখ ডলার। এটা দেওয়া হয় ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য। “তাহলে আমাদের বেলায় কী হবে? আমিও তো চাই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ুক।’ দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমেই ইউএআইডির ওপর খড়্গহস্ত হন ট্রাম্প। মার্কিন এই সংস্থা গত শতকের ষাটের দশক থেকেই বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহযোগিতা কার্যক্রম দেখভাল করে আসছে।

ট্রাম্প ও মাস্কের দাবি, সংস্থাটি অহেতুক নানা প্রকল্পে মার্কিন করদাতাদের অর্থ খরচ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কাজে তো আসেইনি, উল্টো জালিয়াতির মাধ্যমে অনেককে পকেট ভরার সুযোগ করে দিয়েছে। ইউএসএআইডি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণেও অর্থ ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ তাদের। মার্কিন সরকারের খরচ কমাতে লোকবল ছাঁটাইও শুরু করেন ট্রাম্প। সবশেষ পেন্টাগন ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের (আইআরএস) ১১ হাজারের বেশি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *