র‌্যাব পরিচয়ে দুই প্রবাসীকে মারধর, ২১ লাখ টাকা লুট

র‌্যাব পরিচয়ে কুমিল্লার দুই দুবাই প্রবাসীকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে ২১ লাখ টাকা, পাসপোর্ট ও মোবাইলসহ মালামাল লুটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারা দুবাই থেকে দেশে ফিরে যাত্রীবাহী বাসযোগে কুমিল্লায় ফিরছিলেন। গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন কেওঢালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় সোমবার (২০ জানুয়ারি) পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাব ও পুলিশ জানিয়েছে, জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আরাগ আনন্দপুর গ্রামের আবু হানিফ ও তার বন্ধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজিব ভূঁইয়া দুবাই থেকে গত ১৪ জানুয়ারি ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছান। পরে তারা দুপুর দেড়টার দিকে এশিয়া লাইন পরিবহনের একটি বাসে করে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা হন। মামলার বাদী প্রবাসী আবু হানিফ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বাসটি বন্দর থানার কেওঢালা এলাকায় পৌঁছলে সাদা রঙের একটি হাইয়েস গাড়ি (মাইক্রোবাস) এসে বাসের সামনে দাঁড়িয়ে গতিরোধ করে। এসময় র‌্যাবের পোশাক পরিহিত ৩-৪ জন ওয়াকি-টকি, হ্যান্ডকাফ ও পিস্তল হাতে বাসে উঠে আমাদের (আবু হানিফ ও রাজিব) বিরুদ্ধে মামলা আছে বলে টানাহেঁচড়া করে।

পরে সঙ্গে থাকা দুটি ব্যাগসহ জোর করে বাস থেকে নামায়। এসময় আমরা চিৎকার করতে থাকি, যাত্রীরাও তাদের বাঁধা দেয়। এসময় গাড়ির স্টাফরা ঘটনার ভিডিও করে। কিন্তু তারা কারো বাধা কর্ণপাত না করে আমাদের নামিয়ে তাদের মাইক্রোতে তুলে হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করে। তারা আমাদের থেকে কিছু ডলারসহ ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ৩টি পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে নেয়।

পরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঢাকার ডেমরা এলাকায় নির্জন রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। পরে বিষয়টি র‌্যাব ও থানা পুলিশকে জানানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ১৬ জানুয়ারি বন্দর থানায় মামলা করেন বলে জানান। র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক জানান, র‌্যাবের পোশাক পরিহিত যে-সব দুর্বৃত্ত বাস থামিয়ে দুই প্রবাসীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে টাকাসহ মালামাল লুটে নিয়েছে তারা র‌্যাবের কেউ নন। ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও থেকে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে সংঘবদ্ধ গ্রুপ রয়েছে। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও গত ৫ আগস্টের ঘটনায় ক্যামেরাগুলো নষ্ট হওয়ায় ওই দিনের ভিডিওচিত্র ধারণ করা নেই। আমরা ভিডিও ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *