ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়ম

উম্মতে মুহাম্মাদীর ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। আগের নবীদের যুগেও নামাজের বিধান ছিল। তবে পদ্ধতিগতভাবে পার্থক্য ছিল। কোনো ব্যক্তি জামাতে নামাজ পড়ার সময় তার জন্য ইমামের অনুসরণ করতে হয়। মুক্তাদি ইমামের পেছনে জামাতে নামাজ পড়ার সময় শুধু ইমামের সঙ্গে কেরাত পড়বেন না। এর বাইরে অন্য সব কিছু পড়বেন। ইমামের সঙ্গে তাকবিরে তাহরিমা থেকে নিয়ে, সানা, রুকু সেজদার তাসবিহ, তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসূরা, রুকু সেজদায় যাওয়া আসার তাকবীর ইত্যাদি যত কিছু ইমাম পড়বেন, সবই মুসল্লি করবেন ও পড়বেন।

হানাফি মাজহাব অনুযায়ী, মু্ক্তাদির জন্য ইমামের পেছনে কেরাত পড়া ওয়াজিব নয়। বরং ইমাম যখন কেরাত পড়বেন মুক্তাদি তখন চুপ থাকবেন এবং ইমামের কেরাত শুনবেন। এ বিষয়ে তারা পবিত্র কোরআনের এই আয়াতের মাধ্যমে দলিল দিয়ে থাকেন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা শোনো মনোযোগ সহকারে এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। (সূরা আরাফ, আয়াত, ২০৪)

এছাড়াও আরেকটি হাদিসের মাধ্যমে হানাফি মাজহাবের আলেমরা দলিল দিয়ে থাকেন। যেখানে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ فَقِرَاءَتُهُ لَهُ قِرَاءَةٌ

যে ব্যক্তির ইমাম আছে তার ইমামের কেরাতই তার জন্য কেরাত বলে ধর্তব্য হবে। (সুনানে ইবন মাজাহ, ৮৫০)। তবে এরপরও কেউ যদি ইমামের পেছনে কেরাত পড়ে তাহলে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে তবে তা মাকরূহ হবে।

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা বুরহানুদ্দীন মরগনানী রহ. বলেন, জামাতে নামাজ পড়ার সময় শুধুমাত্র ইমামের সাথে কিরাত পড়া নিষেধ। বাকি অন্য কিছু পড়া নিষেধ নয়। তাই মুক্তাদি তাকবিরে তাহরিমা থেকে নিয়ে, সানা, রুকু সেজদার তাসবিহ, তাশাহুদ, দরূদ, দোয়া মাসূরা, রুকু সেজদায় যাওয়া আসার তাকবির ইত্যাদি যত কিছু ইমাম পড়বেন, মুসল্লিরাও ইমামের অনুসরণে তাই করবেন ও পড়বেন।

এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অনুসরণ করার জন্যই তো ইমাম নিযুক্ত করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন তাকবীর বলেন, তোমরাও তাকবীর বলো। যখন তিনি কেরাত পড়েন তখন তোমরা নীরব থাকো। যখন তিনি গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায-যুআলীন বলেন, তখন তোমরা আমীন বলো। যখন তিনি রুকূ করেন, তখন তোমরাও রুকূ করো। আর যখন তিনি সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলেন, তখন তোমরা আল্লাহুম্মা রাববানা ওয়ালাকাল হামদ বলো। যখন তিনি সিজদা করেন, তখন তোমরাও সিজদা করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস, ৮৪৬)।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *