অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ‘এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন’ নামের সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন। জানা গেছে, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী গ্রাফিতি’ বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে হামলা ও হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশের লাঠিপেটার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের এ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার বিপরীতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া, জুলাই অভ্যুত্থানের গণহত্যায় অংশ নেওয়া পুলিশের বিচার নিশ্চিতকরণে অক্ষমতা ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। পরপর দুই দিন দুটি স্থানে হামলা ও লাঠিপেটার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায়ও তারা এই দাবি করেছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক তাসনিম বিন মাহফুজ বলেন, ‘পুলিশ জুলাইয়ের ব্যর্থতার ক্ষোভ এখনো মেটাচ্ছে, এসবের দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এখনো কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে সর্বোচ্চ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
তাসনিম বিন মাহফুজ আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অপরাধই যথেষ্ট। পুলিশ এর আগেও প্রথম আলো অফিসের সামনে নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। এসবের কোনো বিচার হচ্ছে না। পুলিশকে এই অনুমতি কে দিয়েছে! পুলিশের এ রকম ফ্যাসিবাদী আচরণ বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। যে উপদেষ্টা তার দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না, তার দায়িত্ব পালন করার প্রয়োজন নেই।’ বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেনারেল সেক্রেটারি এস এম তানিম, নির্বাহী সদস্য তৌকির উদ্দিন, মোয়াজ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
জেনারেল সেক্রেটারি এস এম তানিম বলেন, ‘জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশি হামলার কোনো বিচার এখনো হয়নি। পুলিশের কাজ হলো মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া, অথচ পুলিশের কাছে মানুষ অনিরাপদ। পুলিশের সংস্কার নিয়েও আমাদের কথা বলতে হবে, তারা এখনো ফ্যাসিবাদী কায়দায় মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এসবের দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’ বিক্ষোভ সমাবেশে অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশনের নেতা-কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।