দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরুর পর সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন তিনি। সিটি মিনিস্টার হিসেবে পরিচিত এই পদে থেকে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন টিউলিপ। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। পদত্যগপত্রে টিউলিপ উল্লেখ করেন, তিনি ভুল কিছুই করেননি। পদত্যাগের কারণ হিসেবে টিউলিপ বলেন, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেলে সেটা সরকারের কাজ থেকে মনোযোগ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে পারত।

ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে ২০১৫ সালে লন্ডনের একটি আসন থেকে প্রথমবার তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর গত জুলাইয়ে তিনি ইকোনমিক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁরও নাম আসার বিষয়টি নিয়ে টিউলিপ পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততার বিষয়টি সবাই জানে। যখন আমি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিই, সে সময় আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি।’
পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের জন্য টিউলিপকে চিঠি দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিধিবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করেছেন। সেই তদন্তের বিষয়টি উল্লেখ করে কিয়ার স্টারমার টিউলিপকে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাননি ম্যাগনাস। স্টারমার বলেন, ‘আপনার (টিউলিপ) জন্য দরজা খোলা রইল।’
গতকালই প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের কাছে লেখা এক চিঠিতে ম্যাগনাস বলেন, তদন্তে টিউলিপের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভ্যাব্য ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না। টিউলিপ পদত্যাগ করার পরপরই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, লেবার পার্টির এমপি এমা রেনল্ডসকে নতুন অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।