আজানের জবাব দেওয়ার নিয়ম

আরবি আজান শব্দের অর্থ ঘোষণা। আজান ইসলামের অন্যতম নিদর্শন। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের জন্য আজানের মাধ্যমেই আহ্বান করা হয়। আজান শুনে আজানের জবাব দেওয়া মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। তিনি এরশাদ করেন, ‘যখন আজান শুনবে, এর জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি: ৬১১)

আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো, মুয়াজ্জিন প্রতিটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও বলবে। কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত। (মুসলিম: ৩৮৫) তবে কোনো কোনো বর্ণনায় ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময়ও মুয়াজ্জিনের অনুসরণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানি: ৪৫৮)

তবে সর্বাবস্থায় আজানের জবাব দেওয়া জরুরি নয়। নামাজ আদায়কারী, পানাহার অবস্থায়, ইস্তিঞ্জাকারী, স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত, মহিলাদের ঋতুকালীন ইত্যাদি সময়ে আজানের জবাব দেওয়া যাবে না। তবে অনেক আলেমের মতে আজানের পরক্ষণেই যদি উল্লিখিত কাজগুলো থেকে অবসর হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দিয়ে দেওয়া উত্তম। কোরআন তিলাওয়াতকারী তিলাওয়াত সাময়িক বন্ধ রেখে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। (আদ্দুররুল মুখতার: ১ / ৩৯৭)

আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন না হলে সাধারণ দ্বীনি ও দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকা অনুচিত। সাধারণ বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখবে। ওয়াজ বা কোনো দ্বীনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে সবাইকে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। (ফাতহুল কাদির: ১ / ২৪৮, রদ্দুল মুহতার: ১ / ৩৯৯, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ৫ / ৪২৭)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *